_অবশেষে ভারত ২৩ আগস্ট, বুধবার ১৮:০৪, ২০২৩ তারিখে একটি মহাকাশযানের অবতরণের মধ্য দিয়ে পা রাখলো মহাকাশের ইতিহাসে। এর আগে ২০১৯ সালের চন্দ্রযান-২ এর ব্যর্থতার পর, চন্দ্রজয় অভিযানে সফলতা অর্জনকারী চতুর্থ দেশ হিসেবে তার নাম লেখালো। আগের দেশগুলি ছিলো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং চীন।
একটি রোভার সহ একটি ল্যান্ডার চন্দ্রের পৃষ্ঠে নেমে আসার সাথে সাথে দক্ষিণ ভারতের শহর বেঙ্গালুরু সহ সারা বিশ্বের ভারতীয়রা এক অদ্ভূত প্রাপ্তির পাশাপাশী এমন একটি ঐতিহাসিক মুহূর্তের স্বাক্ষী হওয়ার আনন্দে বিহ্বল হয়ে পড়ে।
পূর্বের ব্যর্থতার কারনগুলিকে মাথায় রেখে নেয়া এই নতুন মিশনটি শুরু হয় এক মাসেরও বেশি সময় আগে, যার আনুমানিক ব্যয় লক্ষমাত্রা ছিলো ৭৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ISRO-এর তথ্য অনুসারে, মিশনটি আরও দুই সপ্তাহ ব্যপী চলবে। চন্দ্রযান-৩ এর ছয় চাকা বিশিষ্ঠ ল্যান্ডার এবং রোভার মডিউলটি পেলোডের সাথে কনফিগার করা হয়েছে যা চাঁদের বিভিন্ন উপাদান, যেমন মাটি ও শিলা বিষয়ক রাসায়নিক এবং মৌলিক তথ্য সরবরাহ করবে।
রাশিয়ার লুনা-২৫ ব্যর্থ হওয়ার মাত্র কয়েক দিন পরেই এলো এই সাফল্য, অবতরণের জন্য ISRO চাঁদের সেই অঞ্চলটিই বেছে নেয়, যেখানে লুনা-২৫ বিধ্বস্ত হয়েছিল। সফ্টওয়্যার ত্রুটির কারণে ভারতের চন্দ্রজান-২’ও অবতরণ করার পূর্বমুহূর্তে বিধ্বস্ত হয়েছিল।
সমগ্র ভারত, এমনকি পৃথিবীর বহু দেশে উদ্বিগ্ন লোকেরা অফিস, দোকান, রেস্তোরাঁ এবং বাড়িতে টেলিভিশনের সামনে অপেক্ষায় ছিলো এক মাহেন্দ্রক্ষণের। মঙ্গলবার উত্তর ভারতের পবিত্র শহর বারাণসী সহ বিভিন্ন নদীর তীরে, মন্দির এবং ধর্মীয় স্থানগুলিতে তেলের প্রদীপ জ্বালিয়ে মিশনের সাফল্যের জন্য হাজার হাজার লোক প্রার্থনা করে।
নাসা অ্যাডমিনিস্ট্রেটর বিল নেলসন এক্স-এ (সাবেক টুইটার) ভারতকে অভিনন্দন জানিয়ে একটি টুইট করেন, ‘আমরা এই মিশনে আপনার অংশীদার হতে পেরে আনন্দিত।’
চাঁদ স্পর্শকারী করার প্রথম যানটি ছিল রাশিয়ার (তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন) লুনা ২, যেটি ১৯৫৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর চাঁদে অবতরন করে।
১৯৬৯ সালের ২০ জুলাই, প্রায় ৬০০ মিলিয়ন টেলিভিশন দর্শক অ্যাপোলো ১১’এর চাঁদে অবতরণ করা দেখেছিল। নীল আর্মস্ট্রং সেদিন চাঁদের মাটিতে পা রেখে বলেছিলেন, ‘এটি মানুষের জন্য একটি ছোট পদক্ষেপ, কিন্তু মানবজাতির জন্য একটি বিশাল লাফ।’ তিনি এবং বাজ অলড্রিন ২১ ঘন্টারও বেশি সময় ধরে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা করার পর চাঁদের নমুনা সংগ্রহ করে পৃথিবীতে ফিরে আসেন।
চীনের চ্যাং’ই-৪ মহাকাশযান ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারী বেইজিং সময় ১০:২৬-এ সফলভাবে চাঁদের দূরবর্তী স্থানে অবতরণ করে।
এ বছরের এপ্রিলে, একটি জাপানি কোম্পানির মহাকাশযান দৃশ্যতঃ চাঁদে অবতরণকালে বিধ্বস্ত হয়। ২০১৯ সালে অনুরূপ কৃতিত্ব অর্জন করার চেষ্টা করেছিল একটি ইসরায়েলি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান, যদিও মহাকাশযানটি আঘাতে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।